ঢাকা , রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫ , ১৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

​রামবুটান চাষে তাক লাগানো সাফল্য

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ২০-০৫-২০২৫ ১১:৪৭:২১ পূর্বাহ্ন
আপডেট সময় : ২০-০৫-২০২৫ ১১:৪৭:২১ পূর্বাহ্ন
​রামবুটান চাষে তাক লাগানো সাফল্য সংবাদচিত্র: সংগৃহীত
একসময় শুধু ক্লাসরুমেই ব্যস্ত থাকতেন। এখন তার পরিচয় একজন সফল উদ্যোক্তা। শখ থেকে শুরু করা রামবুটান চাষে নরসিংদীর শিবপুরের সাধারাচর ইউনিয়নের শিক্ষক মাওলানা আবদুল রশিদের জীবনের মোড় ঘুরে গেছে। মাদ্রাসায় শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি বর্তমানে একজন পরিচিত রামবুটান চাষি। রামবুটান থেকে যার বার্ষিক আয় প্রায় পাঁচ লাখ টাকা।

২০১৫ সালে ইউটিউবে ভিডিও দেখে রামবুটান ফল সম্পর্কে আগ্রহী হয়ে নিজ বাড়ির মাত্র ৬৫ শতাংশ জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে রোপণ করেন কয়েকটি রামবুটান গাছ। তখন তিনি ভাবতেও পারেননি এই উদ্যোগ একদিন তাকে অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল করে তুলবে এবং অনুপ্রেরণা জোগাবে আশপাশের বহু তরুণকে।

পরিকল্পনা, ধৈর্য, নিয়মিত পরিচর্যা ও পরিশ্রম- এই চারটি মূল স্তম্ভের উপর দাঁড়িয়ে আবদুল রশিদের রামবুটান বাগান এখন বিস্তৃত হয়েছে ১৭০ শতাংশ জমিতে। চাষ শুরুর প্রায় পাঁচ বছর পর থেকেই গাছে নিয়মিত ফল আসা শুরু হয়। বর্তমানে তার বাগান থেকে উৎপাদিত রামবুটান দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হচ্ছে, যেখানে বাজারদর কেজিপ্রতি এক হাজার থেকে বারোশ’ টাকা পর্যন্ত।

শুধু ফল নয়, তার বাগান থেকেই উৎপাদিত চারা সংগ্রহ করছেন দেশের বিভিন্ন জেলার আগ্রহী কৃষক ও উদ্যোক্তারা। রামবুটানের প্রতি ভোক্তাদের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। দেখতে অনেকটা লিচুর মতো হলেও এর লোমশ খোসা ও ভিন্ন স্বাদের কারণে এই বিদেশি ফল এখন বাংলাদেশের মাটিতেও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মূলত মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়ায় চাষ হওয়া এই ফল এখন বাংলাদেশের কৃষি খাতে সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত খুলে দিচ্ছে।

স্থানীয় যুবকদের মধ্যে ইতোমধ্যে এই বাগান ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ও আলামিন জানান, একজন শিক্ষক এত বড় উদ্যোক্তা হয়েছেন সেটা তাদের জন্য গর্বের বিষয়। রামবুটান ফল খেতে খুব সুস্বাদু। এতে অনেক পুষ্টিগুণ বিদ্যমান। বিশেষ করে এই ধরনের উদ্যোগ কৃষিকে আবারও একটি আকর্ষণীয় ও লাভজনক পেশা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পারে। একজন শিক্ষক, একজন চাষি, একজন উদ্যোক্তা—মাওলানা আবদুল রশিদের এই পরিচয় এখন সমাজে দৃষ্টান্ত।

চাষি আবদুল রশিদ বলেন, “শুধু ফল বিক্রি করেই নয়, চারা বিক্রি করেও আমি ভালো আয় করছি। আমি চাই, দেশের আরও অনেক জায়গায় রামবুটান চাষ ছড়িয়ে পড়ুক। এজন্য আমি নিজ উদ্যোগে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিচ্ছি আগ্রহী নতুন উদ্যোক্তাদের।”তিনি আরো বলেন, “শুধু অর্থ উপার্জনের দিক দিয়েই নয়, এই উদ্যোগে রয়েছে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা-পরিশ্রম, চিন্তার ভিন্নতা ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত একজন সাধারণ মানুষকেও অনন্য করে তুলতে পারে। কৃষি খাতে এমন উদ্ভাবনী চিন্তা ও সফলতার গল্প দেশের প্রতিটি তরুণদের জন্য নতুন উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প হোক সেটাই আমার চাওয়া।”জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবদুল হাই বলেন, “বাংলাদেশের জলবায়ু রামবুটান চাষের জন্য উপযোগী। যারা আগ্রহী, তাদের আমরা সরকারি পর্যায় থেকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিতে প্রস্তুত।”

বাংলাস্কুপ/ডেস্ক/এনআইএন


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ